Unknown
কর্ণাটকের অখ্যাত গ্রাম দোদ্দাবল্লাপুরের হালিনাহালি। গুগলে সার্চ করলে এই অখ্যাত জায়গার মধ্যে যে নামটা জ্বলজ্বল করে, সেটা অমরুথা ডেয়ারি ফার্ম। এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর তৈরি ডেয়ারি ফার্মটির সুবাদেই অখ্যাত হালিনাহালি আজ এক পরিচিত নাম। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। আইটি কর্মীর হাতে গড়া ডেয়ারি। অবাস্তব শোনালেও তেমনটাই করে দেখিয়েছেন সন্তোষ ডি সিং।


ছিলেন ডেল, আমেরিকা অনলাইনের মতো মার্কিন সংস্থার কর্মী। একটা সময়ে সেই কাজের সুবাদেই ঘুরে বেরিয়েছেন দেশে-বিদেশে। আর এই ঘুরে বেরানোর সুযোগটাই তাঁর সামনে একটা নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। প্রকৃতি প্রেমী সন্তোষের মনে হতে থাকে ১০টা-৫টার জীবন তাঁর জন্য নয়। বরং তিনি এমন কিছু করবেন যা তাঁকে গোটা সপ্তাহ জুড়ে প্রকৃতির কাছে থাকার সুযোগ করে দেবে।


স্নাতকোত্তর শেষে করে প্রায় এক দশক তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করার পর কাজ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন সন্তোষ। মনস্থ করেন, খুলবেন ডেয়ারি ফার্ম। পশু পালন বা খামার নিয়ে নিতান্তই অজ্ঞ হলেও চাকরিজীবনে রপ্ত করা ব্যবস্থাপনা ও নানা ব্যবসায়িক কৌশল নিজের নয়া উদ্যোগে প্রয়োগ করেন সন্তোষ। আর পশুপালনের প্রশিক্ষণ নিতে ভর্তি হন ন্যাশানাল ডেয়ারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। মোটা বেতনের চাকরি ছাড়ার মধ্যে ঝুঁকি ছিল। কিন্তু NDRI তে হাতেকলমে পশুপালনের ক্লাস করে ডেয়ারি ফার্মিং নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করেন তিনি।

৩টে গরু ও ৩ একর জমি

পঠনপাঠন তো হল এবার সেই জ্ঞান কাজে লাগানোর পালা। সপ্তাহান্তে শহর থেকে দূরে পালাবেন বলে যে জায়গা বেছে রেখেছিলেন সন্তোষ সিং, সেটাই হয়ে উঠল তাঁর ঘরবাড়ি। ৩ একরের সেই জমিতে ৩টে গরু নিয়ে শুরু হয় অমরুথা ডেয়ারি ফার্ম। গরুদের লালনপালন থেকে থামার পরিস্কার রাখা – সবটাই সন্তোষ করতেন নিজের হাতে।


প্রাথমিকভাবে সন্তোষ ভেবেছিলেন প্রথম বছরটা খান ২০ গরু নিয়ে ব্যবসা চালাবেন। সেইমতো পরিকাঠামোও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা আমূল বদলে যায় NABARD-এর সৌজন্যে। “NDRI-র এক প্রশিক্ষক একদিন আমার ফার্ম দেখতে এলেন। প্রযুক্তিগত সাহায্যের জন্য তিনিই নাবার্ড-এর দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন”, জানিয়েছেন সন্তোষ। নাবার্ডের সঙ্গে কথা বলে সন্তোষ অনুভব করেন, নিজের ফার্মের পরিকাঠামোর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে গেলে গরুর সংখ্যা ২০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করতে হবে। যাতে দিনে ১৫০০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। তবেই বার্ষিক ১ কোটি টাকার ব্যবসা সম্ভব। এরইমধ্যে নাবার্ড সন্তোষ সিং-কে রুপোর পদক দিয়ে সম্মানিত করে দুধ উৎপাদনে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। নতুন লক্ষ্যে এগোনোর পথে এই রৌপ্য পদক সন্তোষের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল অনেকটাই। তারওপর লক্ষ্যপূরণে আর্থিক সাহায্য দিতে এগিয়ে আসে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ মাইসোর।

নতুন করে শুরু

কিন্তু যেকোনও ব্যবসার মতই সন্তোষকেও খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। একবার টানা ১৮ মাসের খরায় খরার ফার্মের গবাদি পশুদের জন্য খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল সন্তোষকে। এক লাফে খড়-বিচুলির দাম বেড়ে যায় ১০ গুণ। প্রভাব পড়ে উৎপাদনে। নিজের জমানো টাকা খরচ করে কোনওমতে সামাল দিয়েছিলেন সন্তোষ সিং। কিন্তু এই পরিস্থিতি যে আবার উদয় হবে না, তার কোনও গ্যারান্টি ছিল না। অগত্যা নতুন পথের খোঁজ। জলের মধ্যে চাষ করার ব্যবস্থা গড়ে তুললেন সন্তোষ, বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যাকে বলে হাইড্রোপনিক্স। যেখানে গবাদি পশুদের জন্য দিনে প্রায় ১ টন খাবার উৎপাদন হয়।


১৮মাস খরা পর আবার বর্ষণ সন্তোষের সব ক্ষতি পুষিয়ে দিয়েছিল। সন্তোষ এখন আর খরা নিয়েও খুব বেশি চিন্তিত নন। খরা হলেও তা মোকাবিলা করার পরিকাঠামো তিনি নিজেই তৈরি করেছেন। ব্যবসায়িক উত্থান-পতনের এই অভিজ্ঞতা নতুন উদ্যোগপতিদের সঙ্গে ভাগ করতে চান সন্তোষ সিং। তাঁর কথায়, “যখন সবাই খরার সময় ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বা অন্য লাভজনক ব্যবসায় চলে গেছে তখন আমি ভাল সময় আসার অপেক্ষা করেছি। ধৈর্য্য ধরার ফল পেয়েছি”‌। নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকে এগিয়ে গেলে সাফল্য মিলতে বাধ্য!
1 Response
  1. Unknown Says:

    According to Stanford Medical, It is really the ONLY reason women in this country get to live 10 years more and weigh on average 42 lbs lighter than us.

    (And really, it is not about genetics or some secret exercise and absolutely EVERYTHING to do with "HOW" they are eating.)

    BTW, I said "HOW", and not "what"...

    TAP on this link to discover if this brief test can help you discover your true weight loss possibility


Post a Comment