Unknown
গত ছমাস থেকে এক বছরের মধ্যে খাবার ডেলিভারি দেওয়ার স্টার্ট আপেদের সংখ্যা অনেক গুন বেড়েছে। বোঝাবার জন্য বলে রাখা ভাল, ফুড ডেলিভারি কোম্পানিগুলি আসলে কি করে। তারা তাদের সিস্টেমে কাস্টমারের অর্ডার নেয় ,তারপর সেটা একটা খাবার তৈরীর সংস্হা বা রেস্টুরেন্টে সেই অর্ডার পাঠিয়ে দেয়। পরে সেই রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার সংগ্রহ করে নিয়ে কাস্টমারের কাছে পাঠাবার জন্য একজন ডেলিভারি বয়কে পাঠায়।যদিও গ্রাহকের স্বাচ্ছন্দ্যই ফুড ডেলিভারি স্টার্ট আপের মূল লক্ষ্য হলেও দূর্ভাগ্য এটাই তারা খাবারের গুনমান নিয়ন্ত্রণের কোনওরকম কাজ করেনা।

এক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, রেস্টুরেন্ট থেকে প্রতি অর্ডারে খাবার পাঠানোর যা খরচ এই স্টার্ট আপ গুলি তার চাইতে বেশী আয় করতে পারে কিনা।দেখা যাচ্ছে অনেক স্টার্ট আপই অর্ডার ডেলিভারি করে যে টাকা পায় তার চাইতে প্রায় তিনগুন টাকা খরচ করছে ।তারা পুরোটাই ক্ষতির মধ্যে আছে।

আশা একটাই ভবিষ্যতে ডেলিভারি ফোর্স আরো দক্ষ হবে,আর এমন একটা সময় আসবে যখন খাবার ডেলিভারির অর্ডারপ্রতি আয় অর্ডার ডেলিভারির খরচের চাইতে বেশী হবে।সেইসময় ব্যবসায় প্রচুর লাভের মুখ দেখা যাবে।প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন ব্যাবসায় এই যুক্তিই ব্যবহার করা হচ্ছে।


কিন্তু এখন বাস্তবে এটা করে দেখানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

অন্যান্য প্রযুক্তি নির্ভর গ্রাহক পরিষেবার মতই ,খাবার ডেলিভারির স্টার্ট আপ গুলিকেও অজানা লোকেশন থেকে অর্ডার পাওয়া আর ডেলিভারি দেওয়ার

চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এছারাও ব্যবসার পরিবেশের শর্তগুলিকে প্রভাবিত করতে না পারার অক্ষমতা।এছারাও বাহ্যিক বিষয়গুলির

উপর নিয়ন্ত্রণের অভাবও এর জন্য দায়ী।যেমন ক্যাব ডেলিভারি কোম্পানীগুলির ক্ষেত্রে রাস্তাঘাটের অবস্হা দায়ী বা মুদিদোকানের মালের ডেলিভারির ক্ষেত্রে এস কে ইউ(SKUS ) এর সহজলভ্যতা দায়ী আর খাবার ডেলিভারির ব্যবসার ক্ষেত্রে কত তাড়াতাড়ি রেস্টুরেন্টে খাবার তৈরী হল তা গুরুত্বপূর্ণ ।

কোম্পানী গুলি ছোট ছোট এলাকায় ব্যবসা ছড়িয়ে দিয়ে এই সমস্যা কাটাবার চেস্টা করছে। সেকারনে আপনি যেখান থেকে খাবার অর্ডার দিচ্ছেন তার খুব কম দুরত্বের দোকান থেকে খাবারের ডেলিভারি হচ্ছে। এভাবেই খাবারের অর্ডার আর খাবারের দোকানের মধ্যে দুরত্ব কমান হচ্ছে।গ্রসারি বা ওষুধের ক্ষেত্রে এই স্ট্রাটেজিই কাজে লাগান হচ্ছে।খাবার ডেলিভারির স্টার্ট আপ গুলির ক্ষেত্রে আরও দুটি অতিরিক্ত সমস্যা রয়েছে যেগুলি ট্যাক্সি বা ওষুধ ডেলিভারির ক্ষেত্রে নেই।


বেশীরভাগ গ্রাহকই অর্ডার দেওয়ার ঘন্টা চারেকের মধ্যেই তাদের অর্ডার দেওয়া খাবার ডেলিভারি চান( যাতে খাবার না ঠান্ডা হয়ে যায়) কিন্তু ট্যাক্সি ,গ্রসারি বা ওষুধের ক্ষেত্রে তা হয়না।তাদের ক্ষেত্রে সময়ের সীমা টা আরও অনেক বেশী।

খাবার তৈরীর এক ঘন্টা পর যদি খাবারের ডেলিভারি হয় তাহলে তা ঠান্ডা হয়ে যায় খাবারের স্বাদও নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ভারতীয়রা তা একদমই পছন্দ করি না।গ্রসারি আর ওষুধ কখনই ঘন্টা কয়েক পরে নষ্ট হয়ে যায় না।যত চেষ্টাই করা হোক না কেন এই বাধা গুলি কাটানো সম্ভব নয়।আর এর থেকে এটা পরিষ্কার যে দিনে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক অর্ডার ডেলিভারির বেশী ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব নয়।সেকারণেই খাবার ডেলিভারির ব্যবসায় সহজে টাকা কামানো সম্ভব নয়। যত সংখ্যক অর্ডারই আসুক না কেন, অর্ডারের সংখ্যাটা আগে থেকেই নির্দিষ্ট হয়ে থাকবে।

তাহলে এই সব স্টার্ট আপ গুলোর ভবিষ্যত কি

সত্যি বলতে শুধু খাবার ডেলিভারির স্টার্ট আপগুলি টিকে থাকার পিছনে কোনও যুক্তি নেই। তবে খাবার ডেলিভারির গ্রসারি ডেলিভারির স্টার্ট আপ গুলির দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।মনে রাখবেন গ্রাহকেরা সবসময় দিনের শেষে গ্রসারির জিনিসপত্র চান আর খাবার দিনের মাঝামাঝি।

সেকারণেই আমরা খুব শীঘ্রই দেখব গ্রসারি ডেলিভারির স্টার্ট আপগুলো তাদের পরিষেবার মধ্যে খাবার ডেলিভারির ব্যবসায় ঢুকবে।এর ফলে খাবার ডেলিভারির স্টার্ট আপ গুলির শেষের দিন আরও ঘনিয়ে আসবে |
Unknown
কর্ণাটকের অখ্যাত গ্রাম দোদ্দাবল্লাপুরের হালিনাহালি। গুগলে সার্চ করলে এই অখ্যাত জায়গার মধ্যে যে নামটা জ্বলজ্বল করে, সেটা অমরুথা ডেয়ারি ফার্ম। এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর তৈরি ডেয়ারি ফার্মটির সুবাদেই অখ্যাত হালিনাহালি আজ এক পরিচিত নাম। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন। আইটি কর্মীর হাতে গড়া ডেয়ারি। অবাস্তব শোনালেও তেমনটাই করে দেখিয়েছেন সন্তোষ ডি সিং।


ছিলেন ডেল, আমেরিকা অনলাইনের মতো মার্কিন সংস্থার কর্মী। একটা সময়ে সেই কাজের সুবাদেই ঘুরে বেরিয়েছেন দেশে-বিদেশে। আর এই ঘুরে বেরানোর সুযোগটাই তাঁর সামনে একটা নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। প্রকৃতি প্রেমী সন্তোষের মনে হতে থাকে ১০টা-৫টার জীবন তাঁর জন্য নয়। বরং তিনি এমন কিছু করবেন যা তাঁকে গোটা সপ্তাহ জুড়ে প্রকৃতির কাছে থাকার সুযোগ করে দেবে।


স্নাতকোত্তর শেষে করে প্রায় এক দশক তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কাজ করার পর কাজ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন সন্তোষ। মনস্থ করেন, খুলবেন ডেয়ারি ফার্ম। পশু পালন বা খামার নিয়ে নিতান্তই অজ্ঞ হলেও চাকরিজীবনে রপ্ত করা ব্যবস্থাপনা ও নানা ব্যবসায়িক কৌশল নিজের নয়া উদ্যোগে প্রয়োগ করেন সন্তোষ। আর পশুপালনের প্রশিক্ষণ নিতে ভর্তি হন ন্যাশানাল ডেয়ারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। মোটা বেতনের চাকরি ছাড়ার মধ্যে ঝুঁকি ছিল। কিন্তু NDRI তে হাতেকলমে পশুপালনের ক্লাস করে ডেয়ারি ফার্মিং নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস সঞ্চয় করেন তিনি।

৩টে গরু ও ৩ একর জমি

পঠনপাঠন তো হল এবার সেই জ্ঞান কাজে লাগানোর পালা। সপ্তাহান্তে শহর থেকে দূরে পালাবেন বলে যে জায়গা বেছে রেখেছিলেন সন্তোষ সিং, সেটাই হয়ে উঠল তাঁর ঘরবাড়ি। ৩ একরের সেই জমিতে ৩টে গরু নিয়ে শুরু হয় অমরুথা ডেয়ারি ফার্ম। গরুদের লালনপালন থেকে থামার পরিস্কার রাখা – সবটাই সন্তোষ করতেন নিজের হাতে।


প্রাথমিকভাবে সন্তোষ ভেবেছিলেন প্রথম বছরটা খান ২০ গরু নিয়ে ব্যবসা চালাবেন। সেইমতো পরিকাঠামোও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা আমূল বদলে যায় NABARD-এর সৌজন্যে। “NDRI-র এক প্রশিক্ষক একদিন আমার ফার্ম দেখতে এলেন। প্রযুক্তিগত সাহায্যের জন্য তিনিই নাবার্ড-এর দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দেন”, জানিয়েছেন সন্তোষ। নাবার্ডের সঙ্গে কথা বলে সন্তোষ অনুভব করেন, নিজের ফার্মের পরিকাঠামোর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে গেলে গরুর সংখ্যা ২০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করতে হবে। যাতে দিনে ১৫০০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। তবেই বার্ষিক ১ কোটি টাকার ব্যবসা সম্ভব। এরইমধ্যে নাবার্ড সন্তোষ সিং-কে রুপোর পদক দিয়ে সম্মানিত করে দুধ উৎপাদনে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। নতুন লক্ষ্যে এগোনোর পথে এই রৌপ্য পদক সন্তোষের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল অনেকটাই। তারওপর লক্ষ্যপূরণে আর্থিক সাহায্য দিতে এগিয়ে আসে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ মাইসোর।

নতুন করে শুরু

কিন্তু যেকোনও ব্যবসার মতই সন্তোষকেও খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। একবার টানা ১৮ মাসের খরায় খরার ফার্মের গবাদি পশুদের জন্য খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল সন্তোষকে। এক লাফে খড়-বিচুলির দাম বেড়ে যায় ১০ গুণ। প্রভাব পড়ে উৎপাদনে। নিজের জমানো টাকা খরচ করে কোনওমতে সামাল দিয়েছিলেন সন্তোষ সিং। কিন্তু এই পরিস্থিতি যে আবার উদয় হবে না, তার কোনও গ্যারান্টি ছিল না। অগত্যা নতুন পথের খোঁজ। জলের মধ্যে চাষ করার ব্যবস্থা গড়ে তুললেন সন্তোষ, বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যাকে বলে হাইড্রোপনিক্স। যেখানে গবাদি পশুদের জন্য দিনে প্রায় ১ টন খাবার উৎপাদন হয়।


১৮মাস খরা পর আবার বর্ষণ সন্তোষের সব ক্ষতি পুষিয়ে দিয়েছিল। সন্তোষ এখন আর খরা নিয়েও খুব বেশি চিন্তিত নন। খরা হলেও তা মোকাবিলা করার পরিকাঠামো তিনি নিজেই তৈরি করেছেন। ব্যবসায়িক উত্থান-পতনের এই অভিজ্ঞতা নতুন উদ্যোগপতিদের সঙ্গে ভাগ করতে চান সন্তোষ সিং। তাঁর কথায়, “যখন সবাই খরার সময় ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে বা অন্য লাভজনক ব্যবসায় চলে গেছে তখন আমি ভাল সময় আসার অপেক্ষা করেছি। ধৈর্য্য ধরার ফল পেয়েছি”‌। নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকে এগিয়ে গেলে সাফল্য মিলতে বাধ্য!
Unknown
খুবই শোচনীয় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন এক সময়ের নামি নৃত্যশিল্পী তারা বালগোপাল। ৮২ বছর বয়স্ক এই শিল্পীর দুরবস্থার কথা শুনে খারাপ লাগে নিখিল সারুপের। নৃত্যশিল্পীর পাশে দাঁড়াতে উঠেপড়ে লাগলেন একটি লিগ্যাল স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা নিখিল। ক্রাউড ফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম Ketto-র মাধ্যমে একটা ক্যাম্পেনও শুরু করে দেন। ফল মিলল হাতেনাতে। দু'দিনের মধ্যে উঠে এল তিন লক্ষ টাকা। আর যখন ক্যাম্পেন শেষ হল সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ দাঁড়াল আট লাখ টাকারও বেশি। বালগোপালের পাশে দাঁড়িয়েছেন চারশোরও বেশি মানুষ। সবাই হাত বাড়ালে কী হয় এটা তারই একটা নমুনা।


ক্রাউড ফান্ডিং (জনগণের থেকে সংগৃহীত অর্থ) বিষয়টা ভারতে নতুন কিছু নয়। ধীরুভাই আম্বানির ক্ষুদ্র উদ্যোগে পাড়া-প্রতিবেশীদের অর্থের যোগান কিংবা মন্দির তৈরিতে সম্মিলিত দান, চাঁদা, হরদম দেখতে পাই। জনগণের টাকায় এরকম বহু কাজ হয়। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শতাব্দী প্রাচীন সেই কনসেপ্টকেই এখন নতুন রূপ দিয়েছে Ketto, BitGiving কিংবা Wishberry -র মতো স্টার্টআপ।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে ত্রাণের কাজ, আন্ত্রেপ্রেনারশিপ, শিল্প-সাহিত্য, পরিবেশগত বিষয়, স্কুল-কলেজ তৈরি। কিংবা বিশেষ প্রয়োজনে কোনও ব্যক্তির পাশে দাঁড়ানো। এরকম বহু ক্ষেত্রে এখন সহায়ক ভূমিকা নিচ্ছে ক্রাউড ফান্ডিং। রাস্তার পশুপাখিদের নিয়ে কাজ করা দিল্লির সংস্থা Friendicoes একটা সময় উঠে যেতে বসেছিল। সে কথা কানে যেতেই এগিয়ে আসেন পশুপ্রেমীরা। BitGiving স্টার্টআপের মাধ্যমে তাঁরা তুলে দেন ৬০ লক্ষ টাকা। যা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় তিনগুণ। BitGiving-এর সহ-প্রতিষ্ঠাত্রী ইশিতা আনন্দ বললেন,"জনগণ নিজেরাই এগিয়ে এসে জানাচ্ছেন তাঁরা কী চান, মানুষ কী চাইছে। বিদেশে দেখা যায় খেলাধুলা, প্রযুক্তিগত বিষয়ে জনগণ বেশি আগ্রহী। আমাদের দেশে সেটা বেশি দেখা যায় খেলাধুলা সংক্রান্ত বিষয়ে।" এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ

নেওয়ার জন্য ভারতের জাতীয় হকি দলকে পাঁচ লক্ষের বেশি টাকা তুলে দিতে পেরেছিল বিটগিভিং। আবার পর্বতারোহী অঞ্জুম জামশেনপা যাতে চতুর্থবার মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে পারেন এবং নিজের রেকর্ড ভাঙতে পারেন, সেজন্য তাঁকে ২৪ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিল Catapooolt.

ফেলে আসা বছরে (২০১৫) এ রকমই বহু সহায়তা প্রদানকারী মানুষের সাক্ষী হয়েছে দেশ।Wishberry-র সহ-প্রতিষ্ঠাত্রী অংশুলিকা দুবে জানালেন, "শিল্পকলা-সাহিত্য বরাবরই পৃষ্ঠপোষকতার ওপর নির্ভরশীল। এখন সেই সাহায্যের হাতের সঙ্গে মিশেছে প্রযুক্তি। এর দরকারও রয়েছে। অডিয়েন্সের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে শিল্পীদের এর প্রয়োজন রয়েছে।" হাতেগরম উদাহরণও রয়েছে। সংস্কৃত ভাষায় অ্যানিমেশন ফিল্ম 'পুণ্যাকোতি' (Punyakoti) তৈরির জন্য উইশবেরিকে ৩০০ জন মিলে তুলে দেন ৪২ লক্ষ টাকা। এখনও পর্যন্ত আড়াইশোরও বেশি প্রজেক্টে ৭ কোটি টাকা তুলে দিতে পেরেছে WishBerry. এত টাকা দিলেন কারা?দিয়েছেন ১৫ হাজারের মতো সাধারণ মানুষ। ভরসা এতটাই যে আগামীদিনে আঞ্চলিক ভাষাতেও এ ভাবে টাকা নিয়ে এগিয়ে আসতে চায় অংশুলিকার সংস্থা।

এই প্রবণতা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। Spark Capital (একটি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং ফার্ম)-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর তথা হেড কে. রামকৃষ্ণণ বললেন, "স্টার্টআপের বিষয়টা ক্রমেই জনমানসে ছড়িয়ে পড়ছে। তরুণ সমাজ নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার কথা ভাবছে। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে তরুণ উদ্যোগীরা যদি পুঁজি বা ক্যাপিটালের যোগান পায়, সেক্ষেত্রে তারা সহজেই তাদের আইডিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন।"

বহু সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে সতীশ কাটারিয়ার স্টার্টআপ Catapooolt. সতীশের কথায়, "আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কিছু ইউনিক আইডিয়াকে বাস্তব রূপ দিতে পেরেছি। যেমন ধরুন Greensoles. এই সংস্থা স্পোর্টস স্যু'র চামড়া দিয়ে স্লিপারস বানায়। আমরা একে ২ লক্ষ টাকা তুলে দিতে পেরেছি। স্টার্টআপগুলো এখন আর লগ্নিকারীদের দয়ার পাত্র নয়।" মাত্র দু'বছরে ১৪ হাজার কনট্রিবিউটরের থেকে ২০ কোটি টাকা তুলতে পেরেছে সতীশের সংস্থা।

চেন্নাইয়ে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার কথাই ধরুন। প্রাকৃতিক রোষের মুখে মানুষ তখন অসহায়। ত্রাণের কাজে বেশ কয়েকটি ক্যাম্পেন চালায় Ketto. যা থেকে উঠে আসে এক কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। ২০১২ সালে এই সংস্থা গড়ে তোলেন বরুণ শেঠ, কুণাল কাপুর এবং জাহির আদেনওয়ালা। জন্মলগ্ন থেকে চার হাজারের বেশি ক্যাম্পেন চালিয়েছে সংস্থা। যা থেকে উঠে এসেছে ১০ কোটির বেশি টাকা। সংস্থার বেশ কয়েকটি ক্যাম্পেনে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে বলিউড অভিনেতা হৃতিক রোশন, অভিষেক বচ্চনদের। তারকাদের এই উপস্থিতির ফলে দুটো লাভ হয় বলে মনে করেন জাহির। প্রথমত, সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে। এবং দ্বিতীয়ত, আরও বেশি-বেশি মানুষ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। Ketto-র ঝুলিতে রয়েছে এমন বহু উদাহরণ। মুম্বইয়ে এক তরুণীর বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য ১০ লক্ষের বেশি টাকা তুলে দিতে পেরেছিল সংস্থা। আবার কলকাতায় জটিল রোগে আক্রান্ত একটি মেয়ের পুনর্বাসনের জন্যও একই পরিমাণ টাকা দিয়েছিল। যা সবই জনগণের আশীর্বাদের টাকায়।

(লেখা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম বিশেষজ্ঞ রাজ দুলাল মুখোপাধ্যায়